পিরোজপুর প্রতিনিধি: সকালের সূর্য প্রথম আলোর সঙ্গে শুরু হয়েছে বাংলা নতুন বছর-১৪২৯। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ২ বছর পর বাঙালি জাতি পূর্ণোদ্যমে উদযাপন করছে পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন এবং বাঙালীদের জন্য সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। করোনা মহামারির আগের মতোই খুব ভোরে এই আনন্দ উদযাপনে রং-বেরংয়ের পোশাক পরে বের হয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। পুরুষরা বাহারী পাজামা-পাঞ্জাবি, নারীরা শাড়ী আর উজ্জ্বল পোশাকে শিশুরা যোগ দিয়েছেন মঙ্গল শোভাযাত্রায়। সবার কন্ঠে ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু পুরনো চেনা গান এসো হে বৈশাখ এসো এসো। গান গেয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে বাঙালির ঐতিহ্য বৈশাখী মেলার উদ্বোধনের মাধ্যমে বাঙালি বরণ করে নেয় বাংলা নতুন বছর-১৪২৯।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং জেলা শিল্পকলার ব্যবস্থাপনায় শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গন থেকে ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। পিরোজপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিল্পকলা একাডেমী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা রং- বেরংয়ের বাঙালি ঐতিহ্য পালকী, বর-বধু, জেলে, কৃষাণ-কৃষাণী, বহুরুপি সাজে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন দিন ব্যাপি বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান।
এতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনিরা পারভীন (শিক্ষা ও আইসিটি), সিনিয়র সাংবাদিক গৌতম চৌধুরী, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১লা বৈশাখ থেকে ৩ বৈশাখ পর্যন্ত বৈশাখী লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়।
তিনব্যাপি এ মেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য সমৃদ্ধ বিভিন্ন ষ্টল সাজানো হয়েছে। এ লোকজ মেলায় বাঙ্গালীর সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে জড়িত নাগরদোলা, নৌকাদোলা সহ বিভিন্ন রাইডস, মুড়ি, চিড়া, গুড়, তালপাখা, মৃৎশিল্প, মধু, পাটজাত দ্রব্যসহ বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে ষ্টল সাজানো হয়।
ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলায় দীর্ঘদিন পর মানুষ ভিড় জমাবেন, কিনবেন ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, খেলনাসহ নানান জিনিসপত্র। এ বছর পহেলা বৈশাখ রমজান মাসে হওয়ায় আয়োজনে জনসমাগম কিছুটা কম। এ ছাড়া পিরোজপুর জেলার সকল উপজেলায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।