আব্দুল মজিদ মল্লিক, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
টানা তিন দিন বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো শীতে চরম বিপাকে পড়েছেন দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ। সকালে কুয়াশার পরিমাণ কমে রোদের দেখা মিললেও উত্তরের হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় নওগাঁয় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এটি চলতি শীত মৌসুমে সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে চলতি শীত মৌসুমে তার আগে নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা বিরাজ করলে সেটিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ,১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বিরাজ করলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে ডিসেম্বরের শেষ ১০ দিন ও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নওগাঁয় একাধিকবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও গত সোমবার থেকে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। দিনের প্রথম ভাগে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তরের হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে কনকনে শীতে জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক খবির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন,রোদ উঠিছে তারপরেও ঠান্ডার চোটে হাত-পা ক্যান-ক্যান করিচ্ছি। মনে হচ্ছে হাত-পার রগ জড়ে যাচ্ছে। ঠান্ডার জন্য হাত দিয়ে রিকশার হ্যান্ডেল ঠিক মতোন ধরতে পারিচ্ছি না। ইকশা চালানাই কঠিন হয়ে পড়ছে।
শহরের ব্রিজের মোড়ে অন্য কয়েকজন দিনমজুরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সদর উপজেলার ইকরকুড়ি গ্রামের মিরাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, তিন-চার দিন ধরে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে বাড়িত থেকে বের হয়নি। আজকে সকালে যদিও খুব ঠান্ডা লাগছে তারপরও সকালে রোদ ওঠায় কাজ করতে বাড়িত থেকে বের হয়ে আসিছি। কিন্তু বের হয়ে দেখি ব্যাপক বাতাস করোছে। শীতের চোটে গায়ে চাদর দিয়ে ঠান্ডা কমোছে না।এ ব্যাপারে নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন,গত সোমবার থেকে নওগাঁয় তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রয়েছে। মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। উত্তরের হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় রোদ উঠলেও শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। এ ধরনের আবহাওয়া আরও দুই-তিন থাকতে পারে বলে তিনি ধারনা করেন।#
