দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা ও নদ-নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলায় দুই সপ্তাহ ধরে বাড়তে শুরু করেছে শীতের মাত্রা। সন্ধ্যা নামার আগেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের প্রকৃতি। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। অন্যদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা রোগে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
আবহাওয়ার পরিবর্তন ও ঠান্ডার প্রভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন হাসপাতালগুলোতে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় একই বেডে চিকিৎসা নিচ্ছে দুজন করে শিশু। আবার অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালের বারান্দায়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের আনিছুর রহমান বলেন, ‘তিন দিন ধরে আমার নয় মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আছি। এখানে একটি বেডে দুজন করে শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
চিলমারী উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রানু বালা জানান, কয়েক দিন ধরে শীত ও বাতাস বাড়ার কারণে তার বাচ্চার শ্বাসকষ্ট ও জ্বর দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে এসেছেন চিকিৎসা নিতে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের এক নার্স জানান, শীত বাড়তে শুরু করায় প্রতিদিন এখানে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেডের অভাবে তাদের হাসপাতালে রাখা যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাহীনুর রহমান বলেন, ‘শীতের প্রকোপে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে বেডের বিপরীতে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি আছে। চিকিৎসক সংকট সত্ত্বেও আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি।’
শীতের শুরুতেই শুধু কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২০০ থেকে ১৩০০ রোগী। আর প্রতিদিনই ভর্তি থাকছে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী। দুই সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা বিরাজ করছে ১৬ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।