রেদোয়ান হোসেন জনি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: মিরসরাইয়ে বিজিবির সোর্স সন্দেহে দুই ভাইয়ের উপর মাদক ব্যবসায়ীর হামলার ঘটনায় চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩২৩, ৩২৫, ৩৭৯, ৩০৭, ৫০৬, ৩৪ দণ্ডবিধির ধারায় মামলা নং-৬৯/২২ দায়ের করেন হামলার শিকার মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর আমলীঘাট ফরেস্ট অফিস এলাকার মৃত রইছ উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র আরিফ হোসেন প্রকাশ বাবু (২৯)।
মামলায় একই এলাকা করেরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর আমলীঘাট ফরেস্ট অফিসের মৃত আহছান উল্লাহ’র পুত্র মাদক ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুল (২৮), ও তার ছোট ভাই মোঃ সজিব (২১) এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে অভিযুক্ত করে উক্ত মামলা দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২২ জানুয়ারী দিবাগত রাতে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অলিনগর আমতলী এলাকায় সীমান্ত পিলার-২২০৩ এর ২/আর.বি গজ থেকে বিজিবি অলিনগর ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ লক্ষ টাকা মূল্যের ভারতীয় মেখ ডুয়েল ৩৯ বোতল মদ উদ্ধার করে। মদ উদ্ধারের ওই ঘটনার সূত্র ধরে ২৮ জানুয়ারি উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর আমলীঘাট ফরেস্ট অফিস এলাকার মৃত রইছ উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র দুবাই প্রবাসী সালা উদ্দিন (৩২) ও তার ছোট ভাই আরিফ হোসেন প্রকাশ বাবু (২৯) উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করে স্থানীয় মৃত আহসান উল্ল্যাহর পুত্র মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সাইফুল (২৮) কে অভিযুক্ত করে জোরারগঞ্জ থানায় পৃথক ২ টা অভিযোগ দায়ের করেন।
হামলার শিকার আরিফ হোসেন প্রকাশ বাবু বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমি সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করে আসছি। ২৮ জানুয়ারি সকাল নয়টার দিকে আমার বড় ভাই সালা উদ্দিন করেরহাট বাজারে যাওয়ার সময় বাড়ির অদূরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সাইফুল বিনা কারণে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। গালমন্দ করার প্রতিবাদ করলে বিজিবিকে কেন খবর দিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে তাকে (সাইফুল)কে হুঁশিয়ার করা হয়েছে এই বলে সাইফুল ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে তাহার উপর হামলা চালায় এবং গলায় থাকা ৩১ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ওরা তাকে একা পেলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। একই দিন দুপুর ১ টার সময় আমি মোটরসাইকেলযোগে আমলীঘাট ফরেস্ট অফিস যাওয়ার পথে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সাইফুল পিছন থেকে মাথায় কোপ দিয়ে জখম করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। হামলার পর আমার পকেটে থাকা নগদ ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে আমিও জোরারগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। হামলার ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় দুইটা অভিযোগ দায়েরের দুই মাস অতিক্রম হওয়ার পরও অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার বা আইনের আওতায় আনা হয়নি এবং কোন সুরাহা না হওয়ায় চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি।
করেরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজাদ উদ্দিন হামলার ঘটনার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন।
অলিনগর বিজিবি ক্যাম্পের নবাগত ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার জুলফিকার আহমেদ বলেন, আরিফ হোসেন বাবু’র উপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। তবে কি কারণে তার উপর এবং তার বড় ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে সেটা বলা যাচ্ছে না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ও উক্ত (সিআই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামসুজ্জামান জানান, আরিফ হোসেন নামে একজনের আদালতে দায়ের করা মামলার কোর্ট পিটিশন (সিআই তদন্ত) হাতে পেয়েছি, এবিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আমি অচিন্তিত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবো।