রাজশাহীর স্বনামধন্য রাজশাহী কলেজে বেসরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করতে এবং কর্মরতদের নিয়োগ ব্যতীত নতুন নিয়োগ না দেওয়ার দাবীতে মানববন্ধন করেন কলেজের কর্মচারীরা। মানবন্ধনের মাধ্যমে এই কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২টায় রাজশাহী কলেজের প্রশাসন ভবনের গেটে এই মানববন্ধন করেন তারা।
এসময় হাতে হাতে প্লেকার্ড নিয়ে প্রায় ২০০জনের বেশি কর্মচারী জানান, প্রতিষ্ঠান চলছে ৯০ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে অথচ তাঁদের মূল্য নেই, সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করলেও তাঁদের অবস্থান ডে লেবারের নীচে বলে জানান এই কর্মচারীরা। প্লে কার্ডে জানান, “উপযুক্ত বেতন চাই, পরিবার নিয়ে বাঁচতে চাই”, “বয়স করলাম শেষ, সরকারিকরণের আশায়, বেকার খাটলাম চাকুরী পাবার আশায়”, ” চাকুরি সরকারিকরণ চাই, সরকারিকরণ না হওয়া পর্যন্ত স্কেল অনুযায়ী বেতন চাই”, “চাকুরি সরকারিকরণ করো, নইলে বুকে গুলি করো”, “কর্মরতদের নিয়োগ ব্যতীত নতুন নিয়োগ চলবে না”, ” ৩২ বছর যাবত চাকরি করে অভিজ্ঞতার মূল্য কই?”, “আর কতদিন বেকার খাটবো, পরিবারকে কি খাওয়াবো?” “চাকরি সরকারিকরণ চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই”।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কর্মচারিরা ৩৭ বছর ধরে ঝাড়ুদার, মালি, হোস্টেল কর্মরত আছেন। অনেকে ডে ও নাইট গার্ড হিসেবে কাজ করছেন। এই কলেজে ৯২ শতাংশ বেসরকারিভাবে কর্ম করে যাচ্ছেন। বাকী ৮ শতাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরকারিভাবে কর্মরত আছেন। রাজশাহী কলেজের মহিলা হোস্টেলের প্রশাসন ভবনে সহযোগী কর্মচারি মোসাঃ রহিমা বলেন, সংসারে স্বামী নাই, বিধবা মেয়ে ঘরে, ছেলে মেয়েসহ ৮ জনের পরিবার। ৩০ বছর ধরে চাকরি করেও এতজনের খরচ বহন করতে পারছিনা। সকাল ৯টায় এসে বিকাল ৪টায় বাড়ি ফিরি। আমাদের এই হাল হবে কেন? দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হচ্ছে কিন্তু আমাদের বেতন আশানুরূপ হচ্ছে না। চাকরি স্থায়ীকরণও হচ্ছে না। আমরা ব্যাপক সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছি।
মনু নামের একজন জানান, অনেকেই এই প্রতিষ্ঠানকে ভালোবেসে জীবন যৌবন ঢেলে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের কথা ভাববার সময় কারো হচ্ছে না। আমরা পরিবারের কাছে লজ্জিত হচ্ছি। অনেকে ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের মানবেতর জীবনে একটু প্রশান্তি চাই। আমরা বাঁচার মত বাঁচতে চাই।